এগরার দুবদায় ১০০৩ তম বটগাছ রোপন করে সবুজের বার্তা দিচ্ছেন কাঁথির শিক্ষক শ্যামল জানা।
শহর ছাড়িয়ে রাজ্য, রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ এখন দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে বৃক্ষরোপণ করে সবুজের বার্তা দিচ্ছেন গাছের ফেরিওয়ালা।
পেশায় শিক্ষক। প্রাথমিক স্কুলে শিশুদের ভিত গড়েন তিনি। আর ছুটি পেলে বেরিয়ে পড়েন এদিন-সেদিক। কখনও রাজ্যের কোনও জেলায়, কখনও আবার ভিনরাজ্যে। লক্ষ্য একটাই গাছ পোঁতা। অন্তত দেড় দশক ধরে এমনটাই করে আসছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা শিক্ষক শ্যামল জানা। এবার এগরার দুবদায় গিয়ে বট বৃক্ষ রোপন করে সবুজের বার্তা দিলেন তিনি। বাংলাদেশের জয়পুরহাটেও তিনি এই বৃক্ষরোপণ করেছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি শহর থেকে অন্য দেশে গিয়ে বৃক্ষরোপণ করা সহজ কথা নয়। মনের অদম্য ইচ্ছা প্রকৃতিকে সবুজ করার ডাক বারে বারে ডাকে শিক্ষক শ্যামল জানাকে।
থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে বৃক্ষরোপণ বিশ্ব জুড়ে, সারা পৃথিবী আমার বাগান। এই ভাবনা কে পাথেয় করে শিক্ষক মশাই এগিয়ে চলেছেন দূর দূরান্তে।
কাঁথির কাছে কুলাই পদিমা জুনিয়র বেসিক স্কুল। সেখানেই পড়ান শ্যামলবাবু। থাকেনও পূর্ব মেদিনীপুরেই। কিন্তু তাঁর পরিচয় এখন শুধু স্কুল বা বাড়ির গন্ডিতে আটতে নেই। পরিবেশকর্মী হিসেবে তাঁর নাম এখন পরিচিত রাজ্যের বাইরেও। প্রবাদ রয়েছে ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো’। কেন এমন করেন? শিক্ষক শ্যামল জানার কথায়, ‘আমাদের জীবন তো কাটিয়ে দিলাম। পরের প্রজন্ম যারা, যারা এখন নীচু ক্লাসে পড়াশোনা করছে। তাদের যদি বৃক্ষরোপণের বার্তা না দিই। ভবিষ্যতে বিপদ হবে।’
এমন মহান ভাবনার অধিকারী শিক্ষক সবুজের ফেরিওয়ালা। এবার বিদেশে বাংলাদেশ গিয়ে বৃক্ষরোপণ করলেন তিনি।
তাঁর স্বপ্ন দেশের সব রাজ্যে অন্তত একটা করে বৃক্ষরোপণ করার। তবে শুধু দেশের মধ্যেই আটকে থাকতে চান না তিনি। আপাতত নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার ও শ্রীলঙ্কায় বৃক্ষরোপণের বার্তা পৌঁছতে চান। সেটা ঠিকমতো মিটলে সবকটি মহাদেশে গাছ লাগিয়ে বিশ্বব্যাপী বার্তা দিতে চান তিনি। স্বপ্নটা অনেক বড়, কিন্তু তার চেয়েও বড় শ্যামল জানার অদম্য জেদ।