তাজপুর লাইট হাউস থেকে দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্রের শোভা।পুজোর নতুন ডেস্টিনেশন।

■রাজীব নন্দী

বাঙাল প্রিয় ডেস্টিনেশনে এবার স্বাদ বদলের পালা। তাজপুর লাইট হাউস থেকে একেবারে পাখির চোখে যেন দেখা সমুদ্র সৈকত ও প্রকৃতি সাথে মেরিন ড্রাইভ এর সৌন্দর্যের শোভা।
পর্যটক টানছে রামনগরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র তাজপুরে অবস্থিত দীপস্তম্ভ বা ‘লাইট হাউস’। যা বর্তমানে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয়। তাজপুরে দীঘা-শৌলা মেরিন ড্রাইভ রাস্তার পাশে একটু এগিয়ে গেলে দেখা যাবে, চারদিক জঙ্গলের মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সুউচ্চ লাইট হাউস। সামান্য দূরেই রয়েছে সমুদ্র। পর্যটকরা তাজপুর সৈকতে বেড়াতে এসে লাইট হাউসেও ঢুঁ মেরে যাচ্ছেন। লাইট হাউসের টাওয়ারের চূড়োয় উঠে দূর থেকে সমুদ্র এবং অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশের শোভাও উপভোগ করছেন তাঁরা। এজন্য খরচ হচ্ছে মাত্র ১০টাকা। লাইট হাউসের উপর থেকে প্রকৃতি এবং সমুদ্র দেখলে যেন দু’চোখ জুড়িয়ে যায়। আর রাত্রি হলেই লাইট হাউসের চূড়োয় লাল রঙের বাতি বা আলো জ্বলে ওঠে। সেই আলোই দূর সমুদ্রে জাহাজের নাবিকদের দিক নির্দেশ করে। রাতে লাল আলো জ্বললে লাইট হাউসের শোভা যেন আরও বেড়ে যায়। ভারত সরকারের পত্তন, পোত পরিবহণ ও জলমার্গ মন্ত্রালয়, দীপস্তম্ভ ও দীপপোত নির্দেশালয়ের উদ্যোগে ২০২০সালে সরকারি জায়গায় লাইট হাউসটি তৈরির কাজ শুরু হয়। এর আগে লাইট হাউস তৈরির পাশাপাশি কর্মীদের আবাসন, অফিসঘর প্রভৃতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে লাইট হাউস প্রাঙ্গণে পার্ক সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থা সমগ্র কাজের দায়িত্ব নিয়েছে। এজন্য এক কোটিরও কাছাকাছি টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। কয়েকদশক আগে কাঁথির দারিয়াপুর এলাকায়ও রসুলপুর নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনার কাছে এরকম একটি লাইট হাউস গড়ে তুলেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তাজপুরে বিশ্ববাংলা পার্ক ছাড়া সেই অর্থে দ্রষ্টব্য স্থান নেই। সেখানে লাইট হাউসটি এখন পর্যটক সহ সকলের কাছে যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। উল্লেখ্য, শুধু লাইট হাউস নয়, আগত পর্যটকরা সহ ভ্রমণপ্রিয় মানুষজন যাতে এখানে এসে দু’দণ্ড সময় কাটাতে এবং ঘুরে বেড়াতে পারেন, তার জন্যও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। লাইট হাউস প্রাঙ্গণে সুসজ্জিত পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে সাজানো বাগান, ছোটদের জন্য দোলনা থেকে শুরু করে বসার আসন-সবকিছুই রয়েছে। পর্যটক, ভ্রমণপ্রিয় মানুষজন সহ স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা এখানে এসে লাইট হাউস দেখা এবং আরোহণের পাশাপাশি তাঁদের জানার পরিধিকে আরও সমৃদ্ধ করছেন। তাছাড়া অল্পদিনেই ছোটদের কাছেও বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এই লাইট হাউস। তাজপুরের বাসিন্দা শান্তনু সাহা বলেন, তাজপুরের সৌন্দর্য নিঃসন্দেহে বৃদ্ধি করেছে এই লাইট হাউস। এটি তৈরির পর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তাজপুরের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছে। প্রতিদিনই পর্যটকরা লাইট হাউস দর্শন কিংবা আরোহণ করার জন্য আসছেন। এটা তাজপুরের পর্যটনের একটি ভালো দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *